ভূমিকা:
বিশ্ব অর্থনীতির প্রতিযোগিতার প্রেক্ষাপটে এবং মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রভাবে বেসরকারীখাত বাংলাদেশের শিল্পায়নে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকায় অবতীর্ন হয়। বিশ্বায়নের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বাংলাদেশ বেসরকারী উদ্যোগে শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা এবং সেই শিল্প কারখানা সমুহকে লাভজনকভাবে পরিচালনাকেই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি হিসাবে গ্রহণ করেছে। এ লক্ষ্যে শিল্প উদ্যোক্তাগণকে বিভিন্ন প্রকার প্রণোদনা ও সেবা প্রদানকে নীতি কৌশল হিসাবে অবলম্বন করা হয়েছে। এ অবস্থার প্রেক্ষিতে সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয় ফ্যাসিলিটরের ভূমিকা পালন করছে।
এতদ উদ্দেশ্যে সরকার সময় সময় শিল্প নীতি প্রণয়ন করে। শিল্প নীতি ২০০৫ এ উৎপাদন ও সেবা উভয়ে কর্মকান্ডের ব্যাপক অর্থে শিল্পকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
ক) উৎপাদনমূখী/ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্প: পণ্যের উৎপাদন ও প্রক্রিয়াজাতকরণ,সংযোজন এবং মেরামত, পূন:সংস্কার সাধন ও প্রক্রিয়াকরণ বিষয়ক কাজসমুহ উৎপাদনমুখী শিল্প হিসাবে গণ্য করা হয়েছে।
খ) সেবামূখী শিল্প(নন-ম্যানুফ্যাকচারিং): যন্ত্রপাতি কিংবা স্থায়ী সম্পদের উল্লেখযোগ্য ব্যবহারের মাধ্যমে যে সব সেবামূলক কর্ম সম্পাদিত হয় সে সব কর্মকে সেবামূলক শিল্প হিসাবে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
উভয় শিল্পকে বিনিয়োগের মাপ কাঠিতে ৪(চার) ভাগে ভাগ করা হয়েছে :
১) বৃহৎ শিল্প : বৃহৎ শিল্প বলতে সে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বুঝাবে যেসব প্রতিষ্ঠানের জমি এবং কারখানা ঘর ব্যতিরেকে ও অন্যান্য স্থায়ী সম্পদের মূল্য ১০কোটি টাকার উর্ধে।
২) মাঝারী শিল্প: মাঝারী শিল্প বলতে সে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বুঝাবে যে সব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ভবন ব্যতিরেকে অন্যান্য স্থায়ী সম্পদের মূল্য ১.৫০ কোটি টাকা থেকে ১০.০০ কোটি টাকা।
৩) ক্ষুদ্র শিল্প: ক্ষুদ্র শিল্প বলতে সে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বুঝাবে যে সব প্রতিষ্ঠানে জমি এবং কারখানা ঘর ব্যতিরেকে অন্যান্য স্থায়ী সম্পদের মূল্য অনধি ১.৫০কোটি টাকা।
|
৪) কুটির শিল্প: কুটির শিল্প বলতে সে সব শিল্প প্রতিষ্ঠানকে বুঝাবে যা পরিবারের সদস্যদের দ্বারা পূর্ন অথবা খন্ডকালীন সময়ে উৎপাদন অথবা সেবামূলক কর্মকান্ডে নিয়োজিত। বাংলাদেশ বেসরকারী খাতে শতকরা ৯০ভাগ ক্ষুদ্র,মাঝারী ও কুটির শিল্প এ কারনেই সরকার বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও শিল্পায়নে ক্ষুদ্র ও মাঝারী (এস,এম,ই) শিল্পের উন্নয়ন ও সম্প্রসারনে গুরম্নত্ব আরোপ করেছেন।
বিসিক: শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধিন বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন(বিসিক)দেশের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের সম্প্রসারনে নিয়োজিত সরকারী খাতের মূখ্য প্রতিষ্ঠান যা সরকারের ফ্যাসিলিটরের ভূমিকায় অবতীর্ন রয়েছে। বর্তমান বিসিক তৎকালীন ইপিসিক এর উত্তরসূরী যা ১৯৫৭ সনে এক সংসদীয় আইনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়।